তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা অনেক। আপনি হয়তো জানেন না যে, তরমুজ খেলে কি হয়। তরমুজে কি কি ভিটামিন বা পুষ্টিগুণ রয়েছে। আপনি হয়তো জানলে অবাক হবেন যে এই তরমুজ একটি মানুষের বিভিন্ন পুষ্টির অভাব পূরণ করে। আসুন আমরা জানি যে তরমুজ মানবদেহের জন্য কেন উপকারী।
তরমুজ একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। তরমুজ গরমের সময় প্রচুর লাভজনক একটি ফল। এই তরমুজ আমাদের দেহকে শীতল রাখতে সাহায্য করে। এবং দেহের পানির শূন্যতা পূরণ করে। তরমুজের বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। যা আমাদের দেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। আমাদের সবার উচিত এই তরমুজ খাওয়া।
আরো পড়ুনঃ শুকনো খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
পেজ সূচিপত্রঃ
- তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা
- তরমুজ খেলে কি হয়
- তরমুজে কি কি ভিটামিন রয়েছে
- তরমুজ খেলে একটি মানুষ কিভাবে উপকৃত হবে
- তরমুজের বীজ খাওয়ার উপকারিতা
- অতিরিক্ত তরমুজ খাওয়া ভালো না খারাপ
- তরমুজ খেলে কি কোন ক্ষতি হবে
- তরমুজে ভেজাল
- তরমুজের ক্ষতিকর দিক
- আমার মন্তব্য
তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা
তরমুজ খাওয়ার বিভিন্ন উপকারি দিক রয়েছে। আপনি জানলে হয়তো অবাক হবেন যে,
তরমুজে 90 থেকে 95 % পানি রয়েছে। তরমুজ খেলে মানবদেহের পানির ঘাটতি পূরণ
হয়। অনেক মানুষ রয়েছে যারা পানি কম খায়। বা পানি খেতে চায় না। তারা
যদি এই তরমুজ খাই, তাহলে তাদের দেহের পানির চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে। তরমুজ একটি
পানি ফল। একটি তরমুজের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে। এই পানি একটি
মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী।
তরমুজ একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। এটি গ্রীষ্মকাল ছাড়া অন্য সময় পাওয়া যায় না।
তরমুজ মৌসুমী ফসল। এটি সব সময় পাওয়া যায় না। কিন্তু এর অনেক
চাহিদা অনেক চাহিদা রয়েছে। মানুষ কি তরমুজ প্রচুর পছন্দ করে থাকে। তরমুজ
খেলে মানবদেহের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান হয়। তাই আমাদের উচিত বেশি বেশি
তরমুজ খাওয়া।
তরমুজ খেলে কি হয়
তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। তরমুজে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন
থাকে এটি আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। তরমুজ খেলে মানবদেহের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। পানির ঘাটতি পূরণ করে থাকে এই তরমুজ ফলটি। তরমুজ
খেলে মানবদেহে পানির শূন্যতা কমে যায়। তরমুজ হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। তরমুজ একটি
পানি ফল হওয়ায়, এটি রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
তরমুজ খেলে মানবদেহের চামড়া স্বাভাবিক এবং সতেজ থাকে। আপনি চাইলে এই তরমুজ
শরীরে মাখতে পারেন। এই তরমুজ আপনার শরীর সতেজ রাখবে। এমনকি এই তরমুজ ব্রন দূর
করতে সাহায্য করে। যারা রূপচর্চার জন্য প্রতি মাসে প্রচুর টাকা খরচ করেন তাদের
জন্য এই তরমুজ খুবই উপকারী। তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে।
যা একটি মানুষের ত্বক সুন্দর ও সতেজ করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে কি হয়
তরমুজে কি কি ভিটামিন রয়েছে
তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, এবং ভিটামিন সি রয়েছে। একটি
মানব দেহের জন্য ভিটামিন এ ,ভিটামিন বি ,ভিটামিন সি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন।
অনেক মানুষ রয়েছে যারা এইসব ভিটামিনের জন্য বিভিন্ন রকম ফল সবজি খেয়ে থাকে।
কিন্তু এই সব ভিটামিন একটি ফলেই রয়েছে। তাই তরমুজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ফল।
- ভিটামিন এ
ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ এর অভাবে অনেক
মানুষ দিন কানা বা রাতকানা রোগে ভুগছে। এই ভিটামিন এ প্রচুর পরিমাণে তরমুজে
রয়েছে। তাই তরমুজ খেলে ভিটামিন এ এর অভাব পূরণ হয়ে যাবে।
- ভিটামিন বি
ভিটামিন বি এর অভাবে মানব দেহের হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। অনেক সমস্যার সম্মুখীন
হয় অনেক মানুষ। এই ভিটামিন বি তরমুজে রয়েছে। এই তরমুজ ভিটামিন বি এর অভাব দূর
করে।
- ভিটামিন সি
ভিটামিন সি এর অভাবে মানুষের ত্বকে বিভিন্ন ভাইরাস জনিত বা ব্যাকটেরিয়া জনিত
বিভিন্ন রোগ হয়। মানব দেহের ত্বকের জন্য ভিটামিন সি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি
ভিটামিন। অনেক মুখ উজ্জ্বল করার জন্য বিভিন্ন কেমিক্যাল মুখে ব্যবহার করে থাকে।
এই কেমিক্যাল ব্যবহার করার জন্য তাদের মুখ নষ্ট হয়ে যায়। বেশি পরিমাণে তরমুজ
খেলে ভিটামিন সি এর অভাব দূর হয়ে যাবে।
তরমুজ খেলে একটি মানুষ কিভাবে উপকৃত হবে
তরমুজ খেলে একটি মানুষ বিভিন্নভাবে প্রকৃত হবে। তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন
থাকায় এটি খেলে ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হবে। আবার এটি একটি পানি ফল হওয়ায় একটিতে
প্রচুর পরিমাণে পান রয়েছে। এই তরমুজ খেলে পানির ঘাটতি পূরণ হবে। বর্তমান সময়ে
অধিক মানুষ পানি খুব অল্প পরিমাণে পান করে। তারা এই তরমুজ ফলটি খেলে তাদের এই
পানের ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে। পানি ঘাটটির ফলে কুষ্ঠ কাঠিন্য দেখা যায়।
এই তরমুজের পানি সহ রয়েছে আস । যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এবং
মানবদেহে পানি ধরে রাখে। তরমুজ খাওয়া উপকারিতা অনেক। কিন্তু এর ক্ষতিকর দিক খুবই
কম রয়েছে। তরমুজ গ্রীষ্মকালীন ফল হওয়ায় এই ফলটি গ্রীষ্মকাল ছাড়া অন্য কোন
সময়ে পাওয়া যায় না। তাই এই ফলটি গ্রীষ্মকাল ছাড়া মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ
করতে পারে না।
তরমুজের বীজ খাওয়ার উপকারিতা
তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা যেমন অনেক রয়েছে, ঠিক তেমনি তরমুজ এর বীজ খাওয়ার
উপকারিতা অনেক রয়েছে। আপনি হয়তো জানলে অবাক হবেন যে, তরমুজ খাওয়ার চেয়ে
তরমুজের বীজ খাওয়া অনেক উপকারী। কারণ এই তরমুজের ভিজে বিভিন্ন রকম পুষ্টিগুণ
সম্পন্ন পুষ্টি রয়েছে। যেমন ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফাইবার,
জিংক ইত্যাদি। তরমুজ এর বীজে এতগুলো পুষ্টিগুণ রয়েছে।
আমরা সকলেই জানি যে ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
ক্যালসিয়াম আমাদের হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে। এই ক্যালসিয়াম এর অভাবে অনেক
মানুষ বিভিন্ন রোগে ভুগছে। আর এই ক্যালসিয়াম অতিরিক্ত পরিমাণে রয়েছে এই তরমুজ
বীজে। ফাইবার সাধারণত আস জাতীয় খাবারের থাকে। এই তরমুজ বীজে ফাইবার থাকায় এটি
একটি ফাইবারে উৎস ভাবা যায। জিংক আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী একটি পুষ্ট
উপাদান। জিংক এর অভাবে অনেক মানুষ যেই ট্যাবলেট খেয়ে থাকে। তরমুজ এর চেয়ে তরমুজ
বীজ খাওয়া অনেক ভালো।
অতিরিক্ত তরমুজ খাওয়া ভালো না খারাপ
অতিরিক্ত কোন কিছুই খাওয়া ভালো হয় না। সব কিছুই একটা পরিমাণ মত খাওয়া উচিত।
পরিমাণ এর বেশি হয়ে গেলে সেটি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। আর এই তরমুজ অতিরিক্ত
পরিমাণে খেলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। আসুন সমস্যাগুলো জেনে রাখি। তরমুজে
90 থেকে ৯৩% পানি রয়েছে। পানি আমাদের জন্য ভালো কিন্তু অতিরিক্ত পানি আমাদের
দেহের জন্য ক্ষতিকর। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে তরমুজ খাওয়া যাবেনা ।
তরমুজে রয়েছে সুগার বা গ্লুকোজ এই সুগার পাক গ্লুকোজ একটি স্বাভাবিক মানুষের
জন্য ভালো। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই সুগার বা গ্লুকোজ খুবই ক্ষতিকর।
ডায়াবেটিস রোগীরা এটি অল্প পরিমাণে খেতে পারে। কিন্তু বেশি পরিমাণে খেলে
তাদের ডায়াবেটিস বা সুগার লেভেল বেড়ে যাবে।
তরমুজ খেলে কি কোন ক্ষতি হবে
তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা অনেক রয়েছে কিন্তু এর কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তরমুজ
খেলে খুব একটা ক্ষতি হবে না। কিন্তু অতিরিক্ত তরমুজ খাওয়া ভালো না। তাই
অতিরিক্ত কোন কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তরমুজ খাওয়ার পর শরীরের পানি
নিষ্কাশন করতে হবে না হলে কিডনির সমস্যা হতে পারে।
তরমুজে ভেজাল
বর্তমানে কিছু অসাধু লোক অতিরিক্ত লাভের আশায় কাঁচা তরমুজে বিভিন্ন
কেমিক্যাল দিয়ে তরমুজটিকে পাকিয়ে দেয়। তরমুজ এর ভেতর লাল করার জন্য বিভিন্ন রং
বা বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করে। কারণ মানুষ পাকা তরমুজ ছাড়া কিনে না।
কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই তরমুজের ভেজাল প্রক্রিয়া করে। তরমুজে ভেজাল একটি
মারাত্মক সমস্যা হয়ে পড়েছে। কারণ তরমুজ পাকানোর জন্য বা তরমুজের রং আনার
জন্য যেসব কেমিক্যাল ব্যবহার করে থাকে এইসব কেমিক্যাল একটি মানুষের জন্য মারাত্মক
ভয়ংকর হয়ে থাকে।
তরমুজের ক্ষতিকর দিক
তরমুজে ক্ষতিকর বলতে শুধু তরমুজে যেসব ভেজাল মেশানো হয় এগুলাই তরমুজের ক্ষতিকর
দিক। একটি তরমুজ পাকানোর জন্য যেসব কেমিক্যাল ব্যবহার করে থাকে এবং একটি মানুষের
জন্য অতিরিক্ত পরিমাণে খারাপ হয়। এই এইসব কেমিক্যাল মানুষের ফেটে গেলে বিভিন্ন
রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তরমুজ খেলে ভালো এবং কেমিক্যাল বিহীন যেসব
তরমুজ পাওয়া যায় সেগুলো খেতে হবে। এই তরমুজ খেলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে
পারে।
আমার মন্তব্য
তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক রয়েছে। সবকিছু অতিরিক্ত খাওয়া ভালো না।
পরিমাণ মতো খেতে হবে। ভালো এবং সুস্বাস্থ্য তরমুজ দেখে কিনতে হবে। ভেজাল মেশানো
তরমুজ বিক্রেতা দেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এইসব ভেজাল তরমুজ খেয়ে মানুষ
অসুস্থ হয়ে যায়।
আশা করি এই পোস্টটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। যদি ভালো না লাগে তাহলে কমেন্ট করে
জানাবেন। কোন তথ্য জানার থাকলে বা কোন জায়গায় ভুল হলে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন
আমার যোগাযোগ লিংকে ক্লিক ক করে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url